যাদুবিদ্যা আর যাদুকর
এই দুইয়ের
প্রতিই মানুষের
আগ্রহ সীমহীন সেই মানব সভ্যতার
শুরু থেকেই।
পৃথিবীর মানুষের লোকসংস্কারের এটা বড় অংশই
হলো যাদুবিদ্যা। যাদুবিদ্যা
মূলত: অতিন্দ্রিয়
আর প্রাকৃতিক শক্তিকে বশ
করার
বিদ্যা!
ইংরেজি ম্যাজিক শব্দের উদ্ভব
হয়েছে ফার্সি
মাজি থেকে! মাজিরা
যে সব
ক্রিয়া-কর্ম
পালন
করতো, গ্রীকরা তাকেই
ম্যাজিক বলে
অভিহিত করতেন!
বিভিন্ন সময়ে
বিভিন্ন সমজাবিদ
আর নৃত্বাত্তিকগণ সমাজে
প্রচলিত যাদু
বিধান
গুলো পর্যালোচনা করে এদের বিভিন্ন
শ্রেণী
বিভাগ করার চেষ্টা
করেছেন।
যেমন স্যার জেমস
জর্জ ফ্রেজারের
মতে যাদুবিদ্যার
বিধাব
গুলো প্রধানত দুই রকমেরঃ
Homeopathic Magic:
---------------------------
১, এই যাদু
বিধান সর্বকালে
সব
দেশে শত্রুর ধ্বংসের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত
হয়েছে।
এখানে শত্রুর প্রতিমূর্তি
(মোম, মাটি,
কাঠ, কাপড়),
বা ছবি
ইত্যাদি তৈরি
করার
করে পুড়িয়ে, বা
ছুড়ি দিয়ে
কেটে ধ্বংস
করা হয়!
ধারণা এই
যে,
মূর্তিটা যে যন্ত্রনা
পাচ্ছে,
শত্রুও তেমন যন্ত্রনা বা আঘাত
পাচ্ছে।
এটাকে
ব্ল্যাক ম্যাজিক বলে!
তবে এই
যাদু আবার
অনেক সময়
মানুষে উপকার বা
ভালর জন্যেও
ব্যাবহার করা
হয়।
যেমন ইন্দোনেশিয়ার সমুত্রা
দ্বীপে একটা
এমন একটা
যাদু বিধান
আছে-------কোন
নারীর সন্তান হচ্ছে
না, তখন করা হয় কি
একটা কাঠের
ছোট শিশু
বানিয়ে নি:সন্তান
রমনীটি কোলে
বসিয়ে আদর
করে! এর
ফলে তার
সন্তান হবে এমন
ভাবা হয়!
কখনো কখনো
রোগের চিৎকসার
জন্যও
এই ধরণের যাদুর
প্রয়োগ দেখা
যায়!
যেমন প্রাচীন হিন্দু
সমাজে জন্ডিস
(পান্ডুর) রোগের চিকিৎসার জন্য মন্ত্র
পাঠ
করে রোগীর চোখের
হলুদ অংশ সূর্যের
কাছে পাঠানো
হত।।
২।Contagious Magic:
---------------------------
এই ধরনের যাদু
বিধানের মাধ্যমে
বিশ্বাস করা
হয় মানুষের
শরীরের বিভিন্ন অংশ
বিশেষ যেমন
চুল, নখ,
থুথু বা
পরিধেয়
বস্ত্রের মাধ্যমে যাদু
করে মানুষের
ক্ষতি বা
উপকার দুটাই
করা সম্ভব!
মালয়ে এমন এক
ধরনের যাদু
বিধানের প্রচলন
দেখা যায়---শত্রুর আঙ্গুলের
নখ,
চুল, ভ্রু, থুথু
ইত্যাদি সংগ্রহ
করে মোমের
সাহায্যে শত্রুর
একটা অবিকল প্রতিরূপ
তৈরি করে
তা ছয়
দিন ধরে
মোমের
আলোয় ঝলসাতে হবে
এবং সাত
দিনের দিন
মূর্তিটি পুড়িয়ে
ফেললে শত্রুর
মৃত্যু
হবে!
ভুডু পুতুল
---------------------------
যাদুবিদ্যার ধরন আর
প্রাকরভেদ নিয়ে অনেকে অনেক মত
দিয়েছেন,
তাদের সকল মতবাদ
সমূহ একসাথে
করেলে বলা
যায় যাদুবিদ্যা
প্রধাণত তিন
ধরণের.
১, সৃজনধর্মী যাদু
বা হোয়াইট
ম্যাজিক:
ফসলের ভাল উৎপাদন,
বৃষ্টি আনা,
গাছে ভাল
ফল হওয়া,
প্রেম বিয়ে
হবার ইত্যাদির
উদ্দেশ্য ব্যবহৃত যাদু। এটাকে
বলা হয়
হোয়াইট ম্যাজিক।
২,প্রতিরোধক যাদু:
এই যাদুও হোয়াইট
ম্যাজিকের মধ্যেই পরে। এটা
বিদপ আপদ
এড়ানো,
রোগব্যাধির দূর করা
আর কালো
যাদুর প্রভাব
এড়াবার কাছে
ব্যবহার করা
হয়!
৩,ধ্বংসাত্মক যাদু
বা ব্ল্যাক
ম্যাজিক :
রোগব্যাধি সৃষ্ট,
সম্পত্তি ধ্বংস,
জীবন নাশের
কাজ ব্যাবহার
করা হয়,
ডাইনি বিদ্যায় এর
প্রয়োগ বেশি
দেখা যায়!
এটাই হলো
ব্ল্যাক ম্যাজিক।
সেই প্রাগঐতিহাসিক কাল
থেকে আজও
পর্যন্ত এর
প্রভাব
দেখা যায় রাজনীতি,
অর্থনীতি ও
সংস্কৃতির উপর! যাদুবিদ্যার প্রাচীন ইতিহাস
যদি আমরা খুজে
দেখতে চাই
তাহলে আমাদের
দৃষ্টি দিতে
হবে সেই
প্যালিওলিথিক যুগের গুহামানবদের
গুহাচিত্রের দিকে।
অরিগেনেসিয়ার নামক গুহায়
বেশ কিছু
মুখোশ পরা
মানুষ আর
জন্তু
জানোয়ারের ছবি দেখা
যায়, যেখানে
মানুষগুলোর হাতের আঙ্গুলের প্রথম গিট
পর্যন্ত কাটা!
যদিও নৃত্বাত্তিকেরা এদের
কুষ্ঠরোগ আক্রান্ত
মানুষ বলে
বর্ননা করেছেন,
তবে যাদুবিদ্যা
বিশারদদের মতে মৃত্যুকে
জয় করার
জন্যই হাতের
আঙ্গুল কেটে
তা নিবেদন
করার রীতি সে
আমলে প্রচলিত
ছিল।
দেহের অংশ
বিশেষ দিয়ে
গুন (ব্লাক
ম্যাজিক)
করার রীতি বাংলাদেশেও
দেখা যায়!
প্রাচীন ধর্ম
গ্রন্থ গুলোতেোও
নানা আঙ্গিকের
যাদুবিদ্যা চর্চার প্রমাণ
পাওয়া যায়
সমসাময়িক ধর্মগুরু আর জনগনের !
পারস্যের জোরেয়াস্তার (আনু:
১০০০ খ্রি:পূ) মাজিয়ান
ধর্মের প্রচলন
করেছিলেন যার
মূল
প্রতিপাদ্য ছিল ভাল
ও মন্দের
মধ্যের ভালোর
জয় লাভ। কিন্তু
পরে এ
ধর্মমতের
মধ্যে যাদুবিদ্যার উদ্ভব
হয়! মাজিয়ান
ধর্মের ধর্মীর
আচার অনুষ্টান
গুলো পালনের
নেতৃত্ব দিত যারা
তাদের বলা
হয় মাজি!
এই মাজিরা
মূলত: জ্যোতিষী,
গনৎকার হিসাবে
পরিচিত ছিল,
এরা সূর্য, চন্দ্র,
মাটি, পানি
বাতাস প্রভৃতির
উদ্দ্যেশে শিশু ও পশু
বলি দিয়ে দেহ
রক্ত শুদ্ধ
করত! ইহুদিদের
বাইবেল(ওল্ড
টেস্টেমেন্ট) যাদুবিশ্বাসের
উল্লেখ আছে,
"মোশি যখন সদাপ্রভুর
অস্বিত্ব নিয়ে
জনগণের সন্দেহের
কথা
বলছিলেন তখন সদাপ্রভু
তাকে বললেন
"তোমার হস্তে ওখানি কি? মোশি
কহিলেন
ষষ্টি, তখন তিনি
কহিলেন, উহা
ভুমিতে ফেল। পরে
তিনি তা
ভুমিতে ফেললেন,
ষষ্টি সর্প হইলো। তখন
সদাপ্রভু বলিলেন
উহার লেজ
ধর...মোশি
সাপের লেজ
ধরা মাত্রই তা
আবার লাঠি
হয়ে গেল!
" আল-কুরআনের সুরা বাকারা (৩৫
রুকু, ২৬৯
আয়াত)
একটি অংশের কথাও
উল্লেখ করা
যায় :
"আরও স্মরণ কর
সেই সময়ের
কথা, ইব্রাহীম
যখন বলিয়াছিল:
হে আমার প্রভু,
মোর্দ্দাকে তুমি জেন্দা করিবে কিভাবে,
তাহা আমাকে
দেখাইয়া দাও।
আল্লাহ ইরশাদ করিলেন:তবে তুমি
ইহা বিশ্বাস
কর নাই,
ইব্রাহীন উত্তরে
বলিল,
হাঁ (বিশ্বাস করি)
তবে আমার
অন্ত:করণ
স্বস্তিলাভ করুক এই জন্য
(প্রার্থনা); আল্লাহ বলিলেন:
তাহলে তুমি
চারটা পাখি
গ্রহণ কর
এবং সেগুলোকে
নিজের প্রতি অনুরক্ত
করিয়ে লও,
তাহার পরে
সেগুলো আলাদা
আলাদা চারটি
পর্বতের
উপর রাখিয়া তাহার
পর ডাক
দাও সেগুলোকে-দেখিবে তাহারা
ছুটিয়া আসিতেছে
তোমার
কাছে----"
তবে প্রসঙ্গত উল্লেখ্য
যে, আল-
কুরআনে স্পষ্টভাবে
যাদুবিদ্যার নিন্দাবাদ করা হয়েছে।
মূলত: হযরত মুহাম্মদ
স এর
নবুয়ৎ প্রাপ্তির
আগ পর্যন্ত
সেমেটিক জাতি
গুলোর মধ্যে
ব্যাপক ভাবে যাদুবিদ্যা
চর্চার প্রমাণ
পাওয়া যায়!
মেসোপটেমিয় সভ্যতা গুলো থেকে
যাদুবিদ্যার প্রচুর ট্যাবলেট
পাওয়া গিয়েছে,
যেখানে তিন
শ্রেনীর পুরোহিতের
কথা বলা হয়েছে----বারু,এরা
ছিল যাদুকর
ও গুনিক,
এরা মৃত
প্রানীর যকৃৎ,
নাড়ি
ভুড়ি দেখে ভবিষ্যৎ
গণনা করতো। অসিপু
নামের আরেক
শ্রেনীর পুরোহিত
ছিল ওঝা,
এরা ভুত প্রেত
তাড়াত! তবে
যাদুবিদ্যায় যারা সবচাইতে বেশি ভূমিকা
রেখেছে তারা
হলো প্রাচীন মিশরীয়রা। চতুর্থ
রাজবংশ প্রতিস্ঠা
হাবার আগে
থেকেই মিশরে
ব্যাপক
হারে যাদুবিদ্যার চর্চা
শুরু হয়!
ভুত প্রেতের আছর
থেকে শুরু
করে রোগব্যাধীর
নিরাময় এমন
কি সাপে কাটলেও
তার প্রতিকারের
জন্য আলাদা
আলাদা যাদুবিদ্যার
আশ্রয়
নিত এরা, আর
এইসব কাজ
করার জন্য
আলাদা আলাদা
ওঝা ছিল!
এরা নিগ্রো আর
এশিয়ার মৃত
নারীর আত্মা
সম্পর্কে খুব
ভয় পেত,
আর ভয় করতো
নিজের আত্না
হারানোর! তারা
মনে করতো
যাদুকরেরা
ইচ্ছা করলে যাদুর
সাহায্যের অন্যের আত্মাও চুরি করতে
পারে! তৃতীয়
রামেসেসের সময়ে হুই
নামের এক যাদুকর
সম্রাট রামেসেস
ও তার
পরিবারের সকল
সদস্যদের মূর্তি
বানিয়ে এর
মাধ্যেম রামেসেসের বংশ
ধ্বংস করার
ষড়যন্ত্রও করেছিল একবার।
ইহুদির মিশরে বন্দী
অবস্থায় অবস্থানের
সময়েই মিশরীয়
যাদুবিদ্যার দ্বারা
প্রভাবিত হয়েছিল! অবশ্য
তাদের নিজেদেরও
আলাদা বৈশিষ্ট্যময়
যাদু বিশ্বাস
ছিল।তাদের
বিশ্বাস মতে
স্বর্গভ্রষ্ট আদম পৃথিবীতে যাদুবিদ্যাসংক্রান্ত
একটা বিশেষ বই
এনেছিলেন, যার নাম দ্যা বুক
অব রাজিয়েল!
আবার
কারো কারো মতো
স্বর্গভ্রষ্ট ফেরেশতা উজ্জা ও আজাইল
একজন
নারীকে যাদুবিদ্যার গান
শিখিয়েছিলেন। ইহুদি যাদুকরেরা বাস্পস্নানের
মাধ্যমে বলি আর
উপহার দিয়ে
অতিপ্রকৃত শক্তিকে বশ করার
চেষ্টা করতো! এদের
যাদু চর্চায়
স্হূল যৌনাচার
হত এছাড়া
অল্পবয়স্ক
বালকদের ব্যাবহার করতো
অতিন্দ্রীয় শক্তির সাথে যোগাযোগের মাধ্যম
হিসাবে। তারা
মনে করতো
যাদুবিদ্যার সবার পক্ষে আয়ত্বকর সম্ভব
না, শুধু
মাত্র বিশেষ দক্ষ
ব্যাক্তিদের পক্ষেই এটা সম্ভব আর
এই বিশেষ
দক্ষ ব্যাক্তিদের
মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হলো
কিং সলোমন!
তার ' কি
অফ সলোমান'
বইটা পরবর্তীকালে যাদুবিদ্যার
সর্বশ্রেষ্ট বই হিসাবে স্বীকৃত হয়েছে।
ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীন
ধর্মগ্রন্থ গুলোতেও যাদুবিদ্যা আর
ধর্মের একটা জটিল
সংমিশ্রন দেখা
যায়! স্বপ্নব্যাখ্যাও
প্রাচীন যাদুবিদ্যার
অঙ্গরূপে স্বীকৃতি পেয়েছিল। যেমন
কৌশিক সূত্রে
অনিষ্টকারী ভুত
প্রেতাত্মাকে তারানোর জন্য
সেই অশুভ
শক্তির উদ্দ্যেশ্যে
পাখি যে
ডালে বাসা
বাধে,
সেই ডালের লাকড়ি
দিয়ে রান্না
করে খাবার
উৎসর্গের কথা
বলা আছে। কিছু
বৈদিক ক্রিয়া অনুষ্ঠানে
বলি দেয়া
পশুর নাড়ি
ভুড়ি ও
অন্যান্য অংশ
রাক্ষস আর
সাপকে উৎসর্গ করা
হতো! এখনকার
সমাজেও এমন
অনেক
বৈদিক যাদুবিদ্যাগত প্রক্রিয়া
এখনও চালু
আছে।
হরপ্পা মহেঞ্জোদারতে
উৎখননে প্রাপ্ত রিং
স্টোন গুলো
যাদুবিদ্যায় ব্যাবহার করা হতো বলে
জন
মার্শাল ধারণা করেন। বলা
হয় কেউ
যদি এর
পাশ দিয়ে
যায়
তাহলে তার পাপ
খন্ডন হব!
যেমন আফজাল
খানকে হত্যার
পরে পাপ
খন্ডন করার জন্য
শিবাজী এই
পাথরের তলা
দিয়ে পার
হয়েছিলেন!!
হরপ্পান রিং স্টোন,
ধারণা করা
হয় এগুলো
যাদুবিদ্যায় ব্যবহার করা হতো!
জাপানের প্রাচীন শিন্টো
ধর্মের মধ্যে
যাদুবিদ্যার প্রচুর উদাহরণ
দেখা যায়।
জাপানিরা বিশ্বাস
করে চালের
মধ্যে ব্লাক
ম্যাজিক প্রতিহত
করার
বিশেষ শক্তি আছে,
এছাড়া রাস্তার
সংগমস্থলও তাদের কাছে বিশেষ
ভাবে পবিত্র।
এসব স্থানে
তারা এখনও
জননেন্দ্রীয়ের প্রতিক চিন্থ
স্থাপন করে, বিশ্বাস
করে এই
প্রতিক অশুভ
শক্তিকে দূরে
সরিয়ে রাখবে!
জাপানিদের মতো চীনাদের
ভুত প্রেত
সম্পর্কে বেশ
ভালই ভয়
ভীতি ছিল।
মজার ব্যাপার
হলো, চীনের
ঘরবাড়ি ও
পুল নির্মানে
একটা বিশেষ
দেবতা চীনদের প্রভাবিত
করেছে, এই
দেবতার নাম
হলো শা'। শা
হলো একটা
অপদেবতা, আর চীনারা
বিশ্বাস করে
এই অপদেবতা
সব
সময়ে সোজা রেখা
বরাবর চলে,
তাই এটাকে
প্রতিহত করার
জন্য
চীনা স্থাপত্যশিল্পে ছাদে
এত বক্রতা
আর কোণ!
পরবর্তি কালে
তাওবাদ যেমন
চীনা লোকসংস্কারকে প্রভাবিত
করে, তেমন
করেছিল কনফুসিয়াস।
কনফুসিয়াসের 'আই চিং'
প্রধানত ভবিষ্যৎ
গননার জন্যই
নির্দিষ্ট
ছিল। যাদুবিদ্যা
চর্চায় প্রাচীন
গ্রীক আর
রোমানরাও কম
ছিলেন না।
যাদুবিদ্যার দেবী হেকেটি। যাদু
বিধান প্রয়োগের
জন্য বিশেষ
স্থানে নির্বাচিত করা
হতো, যেমন
গোরস্তান বা
রাস্তার সংগমস্হল!
গ্রীকরা যাদুবিদ্যার জন্য
বিশেষ বর্নমালার
সৃষ্টি পর্যন্ত
করেছিল,
এগুলো লেখা হতো
পবিত্র কালি
দিয়ে আর
লেখার সময়
বার
বার পাঠ করা
হতো, কারণ
ধারণা করা
হতো এভাবেই
যাদুকর
অতিপ্রাকৃত ক্ষমতার অধিকারি
হতে পারবে!
ওয়ার উলফের
ধারণটাও
এদের মাধ্যমেই সৃষ্টি
হয়েছিল! এছাড়া
এরা ফেব্রুয়ারি
শেষ
বা মার্চের প্রথম
সপ্তাহে তিন
দিন ধরে
প্রেতাত্মাদের উদ্দেশ্য
একটা বিশেষ অনুষ্ঠান
পালন করতো,
এখনও করে।
রোমান জনসাধারণ 'বদ
নজর' (evil Eye) কে বিশ্বাস করতো! তারা
মনে করতো
কুনজর
লাগিয়ে মানুষ থেকে
শুরু করে
শস্য গবাদি
সব কিছুরই
ক্ষতি করা
সম্ভব! এই
ধারণটা আমাদের দেশেও
এখনও দেখা
যায়! ছোট
ছোট শিশুদের
কপালে বা
পায়ের নিচে কাজলের
টিপ লাগিয়ে
কুনজর দূরে
রাখার রিতী
এখনও প্রচলিত
আমাদের
দেশে! অন্যান্য জাতিদের
মতোই রোমানারও
ভবিষ্যত জানবার
সকল
উপায় উদ্ভাবন করার
চেষ্টা করেছিল। রোমান
যাদুকরেরা স্বপ্ন বিচার,
কোষ্ঠি বিচার থেকে
শুরু করে
নারী বশিকরন
করার জন্য
নানারকম প্রসাধনীও
ওঝারা বিক্রী করত!
এখানে একটা
কথা না
বললেই নয়,
বর্তমানের রূপচর্চার বহুল
ব্যাবহৃত প্রসাধন দ্রব্য
শুরুতে শুধু
যাদুবিদ্যার কাজেই লাগানো হত!
এভাবে প্রাচীন কাল
থেকে বিভিন্ন
সভ্যতায় মানুষের
জীবন ও
কল্পনায়
যাদুবিদ্যা প্রভাব বিস্তার
করতে থাকলেও
মধ্যযুগে এসে
এটা দানবীয়
রূপ
ধারণ করে।
আর যাদুবিদ্যার
পরিবর্তীত রূপে শয়তানবাদের চর্চা বেশির
ভাগ দেশেই
পূর্নতা পায়!
এই সময়ে যাদুবিদ্যার
যে নিরংকুশ
চর্চা হয়,
তা ছিল
নিষ্ঠুরতা, হিংস্রতা, লালসায় ভরপুর!
এই সময়ে প্রতিটা
যাদুকরকে শয়তানের
কাছে বিশেষ
প্রক্তিয়ায় চুক্তি বদ্ধ হতো।
সকলেই
দাবী করতো যে
সে কোন
দেব- দেবীর
নৈবর্ক্তিক শক্তিকে আয়ত্ব করে রেখেছে।
সাপ, ব্যাঙ, বিড়াল
ও পেঁচা
মধ্যযুগীয় যাদুবিদ্যায় অবশ্যকীয় পশু-পাখি
হিসাবে গণ্য
করা হত।
লোকের ধরণা
ছিল আংটি,
শিশি, বোতল
ও বাক্সে
ভুত প্রেত,
দৈত্য দানোকে বন্দী
করে রাখা
সম্ভব! এখন
এসব শুনতে
হাস্যকর লাগলো,
সে সময়ে এটাই
ছিল বাস্তব!
শয়তানের প্রতিক
হলো শিং। ব্লাক
ম্যাজিক চর্চায়
শিং অপরিহার্য! এই
সময়ের একজন
বিখ্যাত যাদুকর
ছিলেন যোহান
রোসা।
তার
একটা মন্ত্রপুত অংটি
ছিল, যেটায়
একটা প্রেত্মাত্মাকে
তিনি আটকে
রেখএছিলেন
আর এটাকে দিয়ে
সব কাজ
করাতেন! তার
মৃত্যুর পরে
প্রকাশ্য জন
সভায়
আংটিটা হাতুড়ি দিয়ে
পিটিয়ে ভেংগে
ফেলা হয়ছিল্!
গর্ভবতী নারীদের
প্রসব বন্ধ
করা থেকে শুরু
করে যৌনাকাঙ্খা
চিরতার্থ করার
মত বিভৎস
সব যাদু
বিধানের
চর্চা হতো তখন।
এসময়ে বিশ্বাস করা
হতো বশিকরণের
মাধ্যমে মানুষকে
দাস বানিয়ে
রাখা যায়।
যে কোন বিপদজনক
কাজে যাবার
আগে 'প্রয়োজনীয়
মন্ত্রপুত জামা"
পরে যাবার রিতী
ছিল, কুমারী
মেয়ের বড়দিনের
এক সপ্তাহ
ধরে এই
ধরনের
জামা ঘরে বুনত। 'বান'
ছোড়ার কথা
বাংলাদেশে অপরিচিত নয়,
মধ্যযুগের এই (Magical Arrow) ধারণাটার ব্যাপক প্রচার ছিল। বিশ্বাস
করা হতো
এভাবে মানুষের
ক্ষতি করা সম্ভব!
মধ্যযুগে রেনেসাঁর আলো
যতই ছড়াক
না কেন,
জ্যোতিষীদের হাত
থেকে কেউই রক্ষা
পায়নি! অর্থনৈতিক,
সামাজিক আর
রাজনৈতিক
অস্তিরতা প্রভৃতি কারণে
জনমানসে তখনও
ভবিষ্যত জানার
প্রবল স্পৃহাই
এর
কারণ ছিল।
পরবর্তি কালে
হাজার হাজার
ঐন্দ্রজালিক, ডাইনি হত্যা করা হয়েছিল।
প্রতিদিন একটি করে নতুন ভুতের কাহিনি পড়তে চাইলে এখনি
লাইক দিয়ে রাখুন আমাদের ফেসবুক পেজটি …… Info world
No comments:
Post a Comment