NEWS

বাংলায় তুলি প্রযুক্তির সুর

18 Jul 2012

ভূত এবং


২০০৯...।সাল।১৫ ই জুন...
আমি তখন আনন্দ মহন কলেজে এর ১ম বর্সের ছাত্র।সন্ধ্যায় বন্ধুদের সাথে ঘুরতে বেড়িয়েছি।বেড়ানো শেষে ,সেনানিবাসের পাশের একটি চা এর দোকানে চা খাওয়ার আড্ডায় বেশ জমে উঠেছিল। এমন আনন্দ মূহুত্রে হঠাৎ দুঃখের সংবাদ এই যে, ঢাকা থেকে বড় ভাই ফোন করে জানাল যে , আমার দাদা মারা গিয়াছে।শুনে যেন আমার মাথায় বাজ পড়ল। তখন রাত্রি সাড়ে ৯ টা, ময়মনসিংহ থেকে আমার বাড়ি তিন ঘন্টার রাস্তা, যেতে হয় ট্রেনে। আমার যাওয়া
বাদ্ধতামূলক। শেষ ট্রেন টাও ছাড়ে সাড়ে ৯ টায়।ট্রেন পাওয়ার সামান্য আসা নিয়েই যাত্রা শুরু।ভাগ্যের সফলতায় ট্রেনটি পেলাম।ট্রেনের ভিতরে যাত্রীর পরিমান খুবি কম। আমার মনও খারাপ।তাই একটি খালি ছিটে আমি ঘুমিয়ে পড়লাম।
কখন যে  সময় পেড়িয়ে গাড়ি তারাকান্দি স্টেশনে পৌছায় বুঝতেই পারিনি।
গাড়ি থামার শব্দে আমার ঘুম ভাংল।গাড়ি থেকে নিচে নামলাম। সময় তখন ,১.৫৪ মিনিট।আগের স্টেশনেই গাড়ি থেকে সব যাত্রী নেমে পড়েছিল। এদিক ওদিক তাকিয়ে কাওকে দেখতে না পেয়ে নিজেই নিজের গন্তব্যের দিকে হাটতে শুরু করলাম। মেঘলা আকাশ। চারিদিকে ঘুট ঘুটে অন্ধকার।মনে হয় কিছুক্ষন আগেও এক পশলা বৃষ্টি গ্রামের মেঠপথ
টাকে ভিজিয়ে দিয়েছে।তার ভিতরে সম্বল মোবাইলের আলো। সেটা দিয়ে
শুধু সামনের পথটুকুই দেখা যায়।এই ভাবে ভয় নিয়ে আধা ঘন্টার পথ পেরিয়ে গ্রামের প্রথম সিমানায় পা দিলাম।গ্রামের প্রথম বাড়িটাই চেয়ারম্যান বাড়ি।ওই বাড়িটা নিয়ে লোকের মুখে অনেক ভূতুরে কাঁহিনী শোনা যায়। কারন চেয়ারম্যানের বড় ভাইকে মুক্তি যুদ্ধের সময় পাকিস্তান বাহিনি তাদের বাড়ির পুকুর ঘাটে একটি বট গাছের সাথে বেধে গুলি করে হত্যা করে।তখন থেকে সবাই ওই স্থানটাকে ভৌতিক স্থান হিসেবে চিহ্নিত করেছে।ঘটনা মনে হওয়ার সাথে সাথে আমার মধ্যে ভূত ভীতি প্রকট আকার ধারন করল। আমার চোখ গিয়ে পড়ল সেই পুকুড় ঘাটে।সংগে সংগে আমার বুকটা কেঁপে উঠল,আমি দেখতে পেলাম,সাদা কাপড় মোড়ানো এক বৃদ্ধা আমার দিকে তাকিয়ে চোখ রাঁঙ্গিয়ে হাঁসছে।আমি যত তাকে দেখছি তার হাসি ও চাওনি আমাকে আরো বেশি ভয় দেখাচ্ছে, পাশেই কিছু ইটের খোয়া ছিল । তারই দুই চারটা হাতে নিয়ে ঢিল ছুড়তে থাকলাম ভয় তারানোর জন্য, কিন্তু তাতে কোন লাভ হল না, বৃদ্ধার অগ্নি চোক্ষু আমাকে প্রায় আক্রমন করার সামিল।আশে পাশের বাড়িতে কেউ জেগে নেই। চিৎকার করার সাহস টুকুও হারিয়ে ফেলেছি। তাই বাধ্য হয়ে শেষ শক্তিটুকু পুঁজি করে বাড়ির দিকে দৌড়ালাম। বাড়িতে যখন এসে পৌছালাম তখন আমার প্রায় জ্ঞান হারানোর অবস্থা।কোনমতে মা কে ডাক দিলাম।বাড়ির উঠনে দাদার লাশ রাখাছিল। অনেকেই কান্নাকাটি করছিল।লাশের পাশে গিয়ে আমিও কেদে উঠলাম।কান্নাকাটির মধ্যদিয়েই রাত্রী শেষ হল । সকাল হওয়ার সাথে সাথে আমি আমার এক বন্ধু কে নিয়ে চেয়ারম্যান বাড়ির পুকুড় ঘাটে চলে গেলাম।পুকুড় ঘাটের দিকে তাকিয়েই দেখি সেই বৃদ্ধা ভূতটি এখনও আছে!!!!!!!!!!!!আসলে সেটা ছিল একটা সাদা পলিথিন্‌ , কোন এক ব্যাক্তি পুকুড় ঘাটে সাদা পলিথিন বিছিয়ে কাপড় পরিস্কার করেছিল,যাওয়ার আগে সেই ব্যাক্তি অই পলিথিন কাগজ টি পাসে থাকা বাশের খুটির উপরে রেখে গিয়েছিল। যা দেখতে হুবহু বৃদ্ধা মহিলার মত লাগছিল। আর রাতের অন্ধকারে বাতাসে কাগজটির নড়াচড়াতে জীবন্ত মনে হয়ছিল।
তখন থেকে আমি বিশ্বাস করি ভুত বলতে প্রিথিবীতে কিছু নেই। এ সবই মনের ভূল আর কিছু অলৌকিক কল্পনা মাত্র। আমি যদি অই যায়গায় সকাল বেলা পরীক্ষা করার জন্য না যেতাম তাহলে সবার মত যায়গাটা আমার কাছে সারা জীবন ভৌতিক স্থান হিসেবে থেকে যেত।
 এবার ভাবুন ভূতের বিশ্বাস কি রাখবেন না ছাড়বেন।


Author : S.M Rezve.
From. Dhaka,Uttara university.



































No comments:

Post a Comment

Post Top Ad