মরুভূমির নাম শুনলেই সবার চোখে ভেসে ওঠে বালুময় এক প্রান্তরের কথা। যার ভেতরে নেই কোন বড় গাছ। কেবল আছে কিছু ছোটছোট ঝোপ আর প্রচন্ড গরম। খেজুর গাছ হয়তো কিছু খুঁজে পাওয়াও যেতে পারে, তবে পানি অনেকটা মরিচীকার মতন। যা কেবল মরিচীকাতেই উপস্থিত হয় চোখের সামনে। কিন্তু বিস্তীর্ণ এই বালুর ছড়াছড়ি ছাড়াও মরুভূমি এমন এক স্থান যেখানে রয়েছে হাজারটা রহস্যের খনি। এর বালুর পরতে পরতে লুকিয়ে আছে নিকষ অনেক রহস্য যার ভেদ করা যায়নি কখনোই। আসুন জেনে নিই এমন কিছু মরু রহস্যর কথা।
১. ফেয়ারি সার্কেল
নামিবিয়ার মরুভূমিতে খানিকটা হাঁটলেই কিছু জায়গা জুড়ে দেখা যায় গোল গোল চাকা। ২ থেকে ২০ মিটার অব্দি বাড়তে পারা এই গোলাকৃতির জিনিসগুলোর নাম দেয়া হয়েছে ফেয়ারি সার্কেল। কারণ এই সার্কেল বা চক্রের প্রান্তে এক ধরনের ঘাস জন্মাতে দেখা গেলেও এর মধ্যিখানে কোন ধরনের গাছ, ঘাস বা কোনকিছুই জন্মায় না। এমনকি অনেক যত্ন ও সার পাওয়ার পরেও না। বিজ্ঞানীদরা আজ অব্দি প্রাকৃতিক এই গোল চক্রগুলোর কোন রহস্য ভেদ করতে পারেননি। এদের বয়েস সর্বোচ্চ ৭৫ বছর হয়ে থাকে। ৭৫ বছর পর এমনিতেই অদৃশ্য হয়ে যায় গোলচক্রগুলো। তবে তার আগে কি করে এগুলোকে নেই করে দেওয়া যায় সেটা এখনো রহস্যই রয়ে গিয়েছে সবার কাছে।
২. অদ্ভূতুড়ে কবর
২০০৫ সালে তুতেনখামেনের সমাধিস্থলের পাশেই পাওয়া যায় আরেকটি সমাধিস্থল। সবাই অনেক আগ্রহ নিয়ে ভেতরে ঢোকে সেটার। কিন্তু কিছু কফিন ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায়নি কবরটিতে। কোন মানুষের দেহও নয়। সব কফিনগুলো পাত্র, অলংকার সহ নানারকম জিনিসে ভর্তি থাকলেও একটার ভেতরে ছির আরেকটি কফিন। মনে করা হয় তখনকার কবর চোরদের থেকে বাঁচতে এই নকল কবর বানানো হয়েছিল। কিন্তু তাহলে সেগুলোতে কোন রাজকীয় সিল কেন ছিলনা? চোরদেরকে কি এতটাই বোকা ধরে নিয়েছিল তখনকার মানুষেরা? নাকি চোরদের জন্যে ছিলই না ওটা। অন্য কিছুর জন্যে বানানো হয়েছিল কবরটি? জানা যায়নি আজও। রহস্য রয়ে গেছে রহস্যই!
৩. সিরিয়ার ধ্বংসাবশেষ
২০০৯ সালের কথা সেটা। রবার্ট ম্যাসন সিরিয়ায় মরুভূমিতে কাজ করছিলেন। হঠাৎ কিছু দালান কোঠার নজির আর নানারকম ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করেন তিনি। গিজার পিরামিডের বয়স ৪৫০০ বছর। আর এই ধ্বংসাবশেষের বয়েস হিসেব করা হয় ৬ থেকে ১০,০০০ বছর। সবচাইতে পুরোন শহর দামেস্কও এর কাছে নেহাত শিশু। বেশ কিছুদিন খোড়াখুড়ি চলে সেকানে। তবে আজ অব্দি জানা যায়নি মরুভূমির ভেতরে ওখানে কে এমন দালান-কোঠা বানিয়েছিল আর কেনইবা সেটা নষ্ট হয়ে গেল।
৪. আটাকামা নাইট্রেট
দক্ষিণ আমেরিকার মরুভূমি পৃথিবীর সবচাইতে শুষ্ক স্থান হিসেএ পরিচিত। যেখানে কেউ ছিল না এবং কেউ থাকেওনা। বলা হয় এ মিলিলিটার বৃষ্টি এখানে হলেও সেটা এর জন্যে অনেক। কিন্তু সাধারনত সেটাও হয়না। কিন্তু পানি ও সেই ব্যাকটেরিয়া যেটা দিয়ে নাইট্রেট তৈরি হয়- এগুলোর কোনরকম সাহায্য ছাড়াই এই মরুভূমির ভেতরে স্তুপ হয়েছে এবং হচ্ছে ৭০০ কি.মি লম্বা ও ২০ কি.মি চওড়া নাইট্রেট। আটাকামা মরুভূমি নামে পরিচিত এই মরুভূমির এই আটাকামা নাইট্রেটের জন্ম প্রশান্ত মহাসাগরের কোন এক স্থান থেকে মনে করা হলেও এই রহস্য এখনো ভেদ করা সম্ভব হয়নি।
No comments:
Post a Comment