ফল খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। কথায় বলে ফলই বল। ফলমূল ও খাদ্যের গুণাগুণ সম্পর্কে আমরা খুব একটা সচেতন নই। এমন অনেক ফল আছে যেগুলোকে আমরা ফল হিসেবে তেমন গুরুত্ব দেই না অথচ এসব ফলের পুষ্টিমান দামি অন্যান্য যেকোনো ফল থেকে বেশি। ভেষজ গুণ রয়েছে অনেক ।
পেয়ারা
কলা
আনারস
কামরাঙ্গা
বেল
আমলকী
খেজুর
কতবেল
পানিফল
গাবঃ
পেয়ারা
- পেয়ারা পাতা ও অপরিপক্ব পেয়ারা কলেরা, আমাশয় নিরাময়ে ভালো কাজ করে।
- ত্বকের ক্ষত বা ঘায়ে পেয়ারা পাতা থেঁতো করে প্রলেপ দিলে উপকার পাবেন।
- কচি পেয়ারা পাতা চিবালে দাঁতের ব্যথা কমে।
- মাড়ি ফোলা বা দাঁতের ব্যথায় প্রতিদিন সকালে পেয়ারার ডাল দিয়ে দাঁত মাজলে মাড়ি ফোলা কমবে, ব্যথাও থাকবে না।
- বরই পাতা পিষে খেলে বাতের ব্যথায় উপকার পাওয়া যায়।
- বরই রক্ত পরিষ্কার এবং হজমে সহায়তা করে।
- শুকনো বরই গুঁড়া ও আখের গুড় মিশিয়ে খেলে ইউরিন ইনফেকশন থাকবে না।
কলা
- পাকা কলা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
- কলার থোড় বা মোচা রান্না করে খেলে ডায়াবেটিস, আমাশয় ও আলসার নিরাময় হয়।
- পাকা বিচিকলার বীজ কৃমিনাশক।
আনারস
- পাকা আনারসের জুস নিয়মিত খেলে জন্ডিস ভালো হয়।
- কচি আনারসের শ্বাস ও পাতার রস মধু মিশিয়ে খেলে কৃমি মরে যায়।
কামরাঙ্গা
- পাকা কামরাঙ্গা রক্তক্ষরণ বন্ধ করে।
- কাঁচা ফল ও পাতা সিদ্ধ করে পানি পান করলে বমি বন্ধ হয়।
- কামরাঙ্গা গাছের ডগা ও পাতার গুঁড়া খালি পেটে খেলে জলবসন্ত ও কৃমি নিরাময় হয়।
- কাশি ও অ্যাজমা নিরাময়ে পোড়া কামরাঙ্গা উপকারী।
- লেবুর রস, আদা ও লবণ মিশিয়ে খেলে ঠাণ্ডা ও সর্দি-কাশি উপশম হয়।
- লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খেলে যেকোনো ক্ষত শুকায়।
- লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে ত্বকে লাগালে রোদে পোড়া কালো দাগ থাকবে না।
- কচি চালতার রস পেটের গ্যাস দূর করে। বাতের ব্যথায়ও উপকারী।
- কাঁচা চালতার রস ও আখের গুড় মিশিয়ে খেলে কফ দূর হয়, শ্বাসকষ্ট কমে যায়।
- পাকা চালতার রস চিনিসহ পান করলে সর্দিজ্বর উপশম হয়।
- পাতা সিদ্ধ করে পান করলে কালাজ্বর ভালো হয়।
- হশিকড়ের রস লাগালে ত্বকের চুলকানি সেরে যায়।
বেল
- পাকা বেলের শরবত কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং হজম শক্তি বাড়ায়।
- আমাশয় নিরাময়ে আধা পাকা বেল সিদ্ধ করে খেলে বেশ উপকার হয়।
- বেল পাতার রস ও মধু মিশিয়ে খেলে চোখের ছানি কেটে যায়। স্মৃতিশক্তি বাড়ায়।
আমলকী
- আমলকী নিয়মিত খেলে হাঁপানি, কাঁশি ও জ্বর নিরাময় হয়।
- আমলকী রসের শরবত জন্ডিস, বদহজম দূর করে।
- আমলকীর বীজ চূর্ণ যকৃৎ, অজীর্ণ ও ডায়াবেটিস রোগের প্রকোপ কমায়।
খেজুর
- সকালে খালিপেটে আধাপাকা খেজুরের রস খেলে কৃমি চলে যায়।
- পাকা খেজুর শারীরিক দুর্বলতা কমায়, স্নায়বিক শক্তি বৃদ্ধি করে।
- খেজুরের বিচি চূর্ণ মাজন হিসেবে ব্যবহার করলে দাঁতের যেকোনো দাগ চলে যায়।
- শুষ্ক কাশি এবং অ্যাজমায় খেজুর বীজ চূর্ণ বেশ উপকারী।
- খেজুর গাছের কাণ্ড থেকে নির্গত আঠা ডায়রিয়া ও প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া কমায়।
কতবেল
- পাকা কতবেল যকৃৎ ও হৃৎপিণ্ড ভালো রাখে।
- বিষাক্ত পোকামাকড় কামড়ালে ক্ষতস্থানে বেলের শাঁস প্রলেপ দিলে উপকার পাওয়া যায়।
- কচি কতবেল পাতার রস দুধ ও মিছরির সঙ্গে মিশিয়ে খেলে শিশুদের পিত্তরোগ ও পেটের অসুখ ভালো হয়।
পানিফল
- কাঁচা পানিফল তলপেটের ব্যথা কমায়।
- পানিফলের শুকনো শাঁস রুটি করে খেলে অ্যালার্জি ও হাত-পা ফোলা কমে যায়।
- বিছা কামড়ালে থেঁতলানো পানিফলের শাঁস প্রলেপ দিলে উপকার হয়।
- বরিশাল এলাকায় সর্বাধিক পরিমাণ আমড়া উৎপন্ন হয়।
- আমাড়াতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে।
- আমড়া গাছের ছাল থেঁতো করে এক চামচ রস কিছুদিন খেলে শরীরে খসখসে ভাব থাকেনা এবং শক্তি পাওয়া যায়।
- ৩-৪ গ্রাম আমড়া আঠা, আধকাপ পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে।
- আমড়ার এক চামচ রস-এর সাথে চিনি দিয়ে মিশিয়ে খেলে দু-চার দিনের মধ্যে রক্ত আমাশয় ভালো হয়ে যাবে।
- আমড়া টুকরা করে কেটে অল্প লবণ মিশিয়ে খেলে মুখের স্বাদ ফিরে আসে।
গাবঃ
- সুকনো গাব ফলের গুড়া ১ গ্রাম পরিমাণ সামান্য মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে বাচ্চাদের হিক্কারোগ বন্ধ হয়ে যায়।
- ঠোঁটের দুই পাশে এবং মুখের ভিতরে ঘা হলে গাব ফলের রস সামান্য পানির সাথে মিশিয়ে কয়েকদিন কুলকুচা করলে মুখের ঘা সেরে যাবে।
- অনেক সময় দেখা যায় ফোঁড়া সেরে গেলেও দাগ থেকে যায়। এ ফলের রস কয়েকদিন লাগালে দাগ ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাবে।
- জামের বীজ ডায়াবেটিস রোগের জন্য খুবই উপকারী। বীজ গুঁড়া করে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
- দেহের কোন স্থান কেটে গেলে বা ছিলে গেলে জাম পাতার রস সেখানে লাগালে রক্তপাত বন্ধ হয়ে যায়।
- কচি জাম পাতার রস ২/৩ চামচ কুসুম গরম করে ছেঁকে খেলে কয়েকদিনেই রক্ত আমাশয় ভাল হবে।
No comments:
Post a Comment