আটলান্টিস- একটি হারানো সভ্যতা।
হতে পারে এটি মানুষের কল্পিত অথবা হয়ত তা আসলেই ছিল সদুর অতীতে। আসলেই কি আটলান্টিস ছিল?- এই প্রশ্নটি মানব ইতিহাসের অন্যতম রহস্যময় বিষয় যার সঠিক উত্তর আজও পাওয়া যায়নি। এটি একটি লোককথা বা উপকথার মতো যুগে যুগে রয়ে গেছে। বলা হয়ে থাকে, আটলান্টিস একটি উন্নত সভ্যতা যা হাজার হাজার বছর পূর্বে ধবংস হয়ে গেছে বা হারিয়ে গেছে। যদিও এর কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই তবুও
এটি মানুষের মনের আলেয়া হয়ে আজও পৃথিবীতে রয়ে গেছে।
আটলান্টিসের ব্যাপারেটি সর্বপ্রথম জনসমক্ষে নিয়ে আসেন প্লেটো তার একটি সংলাপে যাতে তিমাউস ও ক্রিটিয়াস নামক দুই গ্রিক আটলান্টিসের কথা উল্লেখ করেন। সংলাপের এই দুই চরিত্র উল্লেখ করেন যে এই সভ্যতাটি ভূমিকম্প বা জলোচ্ছ্বাসের দ্বারা ঐ সময় হতে ৯০০০ বছর পূর্বে ধবংস হয়ে গিয়েছিল। প্লেটোর কথা অনুযায়ী গল্পটি প্রাচীন মিসরীয় পুরোহিতদের কাছ থেকেসংগ্রহীত।
প্লেটোর বর্ণনায় আটলান্টিসের রাজধানী |
কিছু লোকের ধারনাএটি সংলাপের উদ্দেশ্যে প্লেটোর তৈরি একটি কল্পকাহিনী। কিন্তু অনেকেই একে ঐতিহাসিক গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করে। আজও অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষক আটলান্টিসের খোজে পৃথিবী চষে বেড়াচ্ছেন।পৃথিবীর অধিকাংশ সংস্কৃতিতেই ‘ হারানো সভ্যতার ’- উপকথা প্রচলিত রয়েছে। কিছু পণ্ডিতমত প্রকাশ করেন যে এসব উপকথার একটি সাধারন ভিত্তি থাকতে পারে, কারন বিভিন্ন দেশের বা সংস্কৃতির এসব উপকথার মাঝে কিছু সামঞ্জস্যতা লক্ষ্য করা যায়।
আসুন আমরা জানার চেষ্টা করি কিভাবে এই ‘ আটলান্টিস ’ – মিথ এর উৎপত্তি। প্লেটোর সংলাপটি এক্ষেত্রে একমাত্র লিখিত প্রমান যাতে স্পষ্টভাবে আটলান্টিসের কথা বলা হয়েছে। প্লেটোর সংলাপ অনুযায়ী আটলান্টিস একটি উন্নত রাজ্য যার একটি সুগঠিত বিশাল সেনাবাহিনী ছিল। একটি কনফেডারেশনের মাধ্যমে দেশটির শাসন ব্যবস্থা পরিচালিত হতো। শাসকদের নতুন রাজ্য জয়ের আকাঙ্ক্ষার ফলশ্রুতিতে আটলান্টিয়ান সেনাবাহিনী পাড়ি দিল আটলান্টিক মহাসাগরলক্ষ্য ইউরোপ এবং এশিয়া। তাদের এই আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য এথেনিয়ান্সরা গঠনকরল এক বিশাল কোয়ালিশন বাহিনী।
কোয়ালিশন বাহিনী মুখোমুখি হল আটলান্টিয়ানদের। পদে পদে পযুর্দুস্ত হতে হতে তরুপের তাসের মত উড়ে গেল কোয়ালিশন বাহিনী। একে একে ইউরোপ-এশিয়ার অনেক দেশ কুক্ষিগত করে ফেলল আটলান্টিয়ানরা। কোয়ালিশন বাহিনী ভেঙ্গে গেলেও জেদী এথেনিয়ান্সরা পণকরেছিল ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচাগ্র মেদেনী’।মরনপণ লড়াই করে চলল তারা লক্ষ্য নিজ দেশকে এবং আটলান্টিয়ানদের কবল থেকে অন্য দেশগুলোকে নিজেদের দখলে নেওয়ার।
অবশেষে জয় হল সাহসীদেরই। তারা আটলান্টিসও দখল করে নিল। তাদের জয়ের অল্প সময়ের মধ্যেই ( এথেনিয়ান্সরা আটলান্টিয়ানদের রাজ্য তাদের হাতে ফিরিয়ে দিয়ে ফেরত আসার আগেই) মহাদেশটিকে ধাক্কা দিল ক্যাটাস্ট্রপিক ভূমিকম্প এবং জলোচ্ছ্বাস। ডুবে গেল একটি আস্ত মহাদেশ !
আটলান্টিসের অস্তিত্বের স্বপক্ষে প্রমানঃ-
১৯৭৩ সালে Maxine Asher, আটলান্টিসের খোজে পরিচালিত বৈজ্ঞানিক অভিযানের উপপরিচালক, দাবী করেন যে এই অভিযানের মাধ্যমে তাঁরা সাগর তলে আটলান্টিসের খোজ পেয়েছেন।
তাঁর তৎকালীন ইউপিআই (United Press International) এবং আরো গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংবাদ সংষ্থাকে জানানো হয়। তিনি আরও বলেন “ The divers had found evidence of roads and large columns, some with concentric spiral motifs, in the exact place described by the Greek philosopher Plato. This is probably the greatest discovery in World history. ”
মায়া.ভারত,মিশর,আটলান্টিক এবং প্রশান্ত মহাসাগরের বিভিন্ন দ্বীপ এর প্রাচীন পুথি আর পুরাণে সমুদ্র মাঝের ভূ-খন্ড এবং এর সাথে ব্যাণিজ্যিক সম্পর্কের কথা আছে।প্রত্নত্ত্ববিদরা কিছুমজার তথ্য পান মায়া পুরাণে থেকে “দেবতারা নেমে আসলেন আকাশ থেকে তারা ছিলেন আমাদের আদি পুরুষের মত।আর তারা গর্ভবতী করলেন মানবীদের আর জন্ম নিল বিশাল দানব।অবশেষে দেবতাদের কাজ হয়ে গেলে তাদের সমুদ্রে ডুবিয়ে দিলনে”
১৯৭০ সালে Dr Ray Brown বাহামার কাছে সমুদ্র তলে একটি পিরামিডের সন্ধান পান ( ছবি দ্রষ্টব্য )।তিনি এবং তাঁর সহকারি ৪ স্কুবা ড্রাইভার সাগর তলে রাস্তার চিহ্ন, ডোম, আয়তাকারভবন, অপরিচিত কিছু ধাতব যন্ত্রপাতি এবং পিরামিড খচিত এবং ক্রিস্টাল দ্বারা তৈরি একটি “রহস্যময়” দন্ড বাহী ভাস্কর্যের সন্ধান পান। ধাতব যন্ত্রপাতিগুলো এবং ক্রিস্টাল দণ্ডটি পরীক্ষা করার জন্য ফ্লোরিডাতে পাঠানো হয়।
ক্রিস্টাল দণ্ডটি পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা আশ্চর্য হয়ে যান। কারন এটি এর ভেতর দিয়ে গমনকারী শক্তিকে বিবর্ধিত করে। ১৯৬০ সালে Dr Mansan Valentine বাহামাস এর সমুদ্রের নীচে প্রাচীন দালান,রাস্তার ছবি তোলেন।১৯৭৭ সালে Ari Marshall তাঁর অভিযানে বাহামা দ্বিপপুঞ্জে ১৫০ ফুটপানির নিচে একটি বিশাল পিরামিডের অস্তিত্ব খুজে পান।
পিরামিডটি প্রায় ৬৫০ ফুট দীর্ঘ। আর রহস্যজনক ব্যাপার হচ্ছে এই পিরামিডটির চারপাশের পানি পিরামিডটির মুখ থেকে নিঃসৃত সাদা জ্বলজ্বলে পানির ঘূর্ণি দ্বারা প্রভাবিত হয় আর চারপাশের পানির বর্ণ সবুজ যেখানে একই গভীরতায় অন্যান্য স্থানের পানি কাল বর্ণের। Boris Asturua নামক এক সোভিয়েত তাঁর অভিযানের মাধ্যমে পর্তুগালের ৪০০ মেইল দূরে এক ডুবন্ত শহরের খোজ পান। তিনি বলেন রাস্তার চিহ্ন গুলো দেখে বোঝা যায় এতে রেলপথ রয়েছে।
তিনি সেখান থেকে একটি ভাস্কর্য সংগ্রহ করেন। এছাড়াও সাগরের গভীরে পাঁচ একর জুড়ে পিলারের উপর উত্থাপিত নগর দুর্গের সন্ধান পাওয়া গছে যা গ্রীক সম্রাজ্যের সময়কালে তৈরি নগর দুর্গের অনুরূপ। Heinrich Schilemann ট্রয় নগরীর ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করেন। ফলে ট্রয় নগরীর কাহিনির কিছু প্রমান পাওয়া যায় যাকে এর পূর্বে ঐতিহাসিকগণ মিথ হিসেবে বিবেচনা করতেন।
তিনি তাঁর অভিযানের মাধ্যমে পাওয়া অনেক জিনিসের মধ্যে একটি ব্রোঞ্জের তৈরি বাক্সের মধ্যে সংরক্ষিত কিছু অজানা ধাতব বস্তু খুজে পান। বাক্সটিতে পাওয়া তথ্য গবেষনা করে প্রত্নতাত্ত্বিকরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে এটি আটলান্টিসের রাজা ক্রোনোস এর পক্ষ থেকে ট্রয়ের রাজা প্রিয়ামের জন্য উপহার।
thanks for the post.
ReplyDeleteinteresting
ReplyDeleteভাল লাগল
ReplyDeleteচালিয়ে চান বস, দারুন পোষ্ট
ReplyDelete