তার হাসি বিশ্ব চেনে। মানুষটিকে নয়। সেই রহস্যময়ীর পরিচয় জানতেই তোলপাড় এবার ফ্লোরেন্সের এক সমাধিস্থলে। শুরু হয়েছে খোঁড়াখুঁড়ির অভিযান। মোনালিসা। শিল্পের ইতিহাস বিশেষজ্ঞরা বহু দিন ধরেই বলে আসছেন, লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির এ ছবির প্রেরণা লিসা গেরারদিনি। ফ্লোরেন্সের প্রখ্যাত
রেশম ব্যবসায়ী ফ্রান্সেসকো দেল গিওকোন্দোর স্ত্রী। যদিও এ দাবির সমর্থনে প্রমাণ মেলেনি কখনো।
অনেকে মনে করেন, লিসার সৌন্দর্যকে মূলধন করে মোনালিসাকে অাঁকলেও তাতে মিশে রয়েছে এক তরুণের আদল! তিনি হলেন দ্য ভিঞ্চির সহকারী গিয়ান গিয়াকোমো ক্যাপ্রোত্তি। গবেষকদের একাংশের দাবি, এই গিয়ানের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল দ্য ভিঞ্চির। সালাই অর্থাৎ খুদে শয়তান নামে ডাকতেন তাকে। এই তর্কের মীমাংসা করতেই এ বছর এপ্রিল মাস থেকে শুরু হয়েছে এই কবর খোঁড়ার অভিযান। উদ্দেশ্য লিসা গেরারদিনির কবর খুঁজে বের করা। গবেষকদের বক্তব্য,
কবর থেকে গেরারদিনির খুলি উদ্ধার করা গেলেই সমাধান সম্ভব এ রহস্যের। ইতালির ন্যাশনাল কমিটি ফর দ্য প্রোমোশন অফ হিস্টোরিক অ্যান্ড কালচারাল হেরিটেজের প্রধান সিলভানো ভিনসেটির ব্যাখ্যা,
প্রযুক্তির সাহায্যে এখন অনেক কিছুই সম্ভব। খুলিটি পাওয়া গেলে কম্পিউটারেই এঁকে ফেলা যাবে তার মালিকের চেহারা। সে ছবির সঙ্গে আসল মুখের মিল থাকবে কতটা?রেশম ব্যবসায়ী ফ্রান্সেসকো দেল গিওকোন্দোর স্ত্রী। যদিও এ দাবির সমর্থনে প্রমাণ মেলেনি কখনো।
সিলভানো ভিনসেটি উত্তরটা দিলেন উল্টো দিক থেকে। তার বক্তব্য,
খুব বেশি হলে চার থেকে আট শতাংশ হেরফের হতে পারে আসল মুখের সঙ্গে। তাতে খুব বেশি অসুবিধা হবে না। গেরারদিনির দেহাবশেষ মিললে অনায়াসেই দেখে নেওয়া যাবে কেমন দেখতে ছিলেন ষোড়শ শতকের ওই মহিলা। ১৫০৩ থেকে ১৫০৬ সালের মধ্যে অাঁকা মোনালিসার সঙ্গেই বা তার মিল কতটা। হিসাব কষা যাবে কতটাই বা মিশে আছে দ্য ভিঞ্চির সেই সহকারী গিয়ানের আদল। এই তরুণের বেশ কিছু ছবি এঁকেছিলেন শিল্পী। যার কয়েকটিতে মেয়েলি আদল বেশ স্পষ্ট। আপাতত চলছে গেরারদিনির আসল আদলের খোঁজ। ফ্লোরেন্স শহরের সেন্ট ওরসোলা কনভেন্টে। গবেষকদের ধারণা, গেরারদিনির দুই মেয়ে সন্ন্যাসিনীর জীবন বেছে নিয়েছিলেন। তারা এই কনভেন্টে থাকতেন। গেরারদিনিও তার জীবনের শেষ বছরগুলো কাটিয়েছিলেন এখানেই। ফলে এখানেই তার সমাধি থাকার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তবে কত দিনে এ প্রশ্নের উত্তর মিলবে, তা অবশ্য জানা নেই কারও।
সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন।
No comments:
Post a Comment